ক্রুজ (cruise) কন্ট্রোল কি? কিভাবে কাজ করে?

 


ক্রুজ (cruise) কন্ট্রোল কি? কিভাবে কাজ করে?


ইংরেজিতে cruise মানে দাড়ায় উদ্দেশ্যহীন ভ্রমন।এখন অটোমোটিভ ড্রাইভিং এ এই শব্দের অর্থ কি? এটার কিন্তু আরেকটা মানে হয় সেটা হল 'সমুদ্র যাত্রা'। সামুদ্রিক  জাহাজ কোন একটা অভিমুখে ছেড়ে দিলেই হয় কোন ব্রেক বা এক্সিলারেশন করার দরকার হয়না গাড়ির মতন।

গাড়িতেও ব্যাপারটা এরকম। এটা এমন একটা প্রযুক্তি যেটা কিনা একটি নিদিষ্ট গতিতে গাড়িকে সচল রাখে এক্সিলারেটরে পা না রেখেই।

.

এবার আসা যাক ক্রুজ কন্ট্রোল কিভাবে কাজ করে সে ব্যাপারে। 

শুনতে অবাক লাগলেও সত্ত যে আমাদের দেশে অনেকে ব্লুটুথ সিস্টেমকে ক্রুজ কন্ট্রোল সিস্টেম মনে করেন। যাহোক টেকনিক্যালি মোটর চালিত গাড়িতে যে প্রযুক্তিটি অটোমেটিক্যালি গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রক করে সেটাই ক্রুজ কন্টোল। অনেক সময় এটাকে স্পিড কন্ট্রোল বা অটোক্রুজ ও বলে। টেকনোলজিটা মূলত আপনার গাড়িকে একটা নিদিষ্ট গতিতে স্থির করে দেয় আর এক্সিলারেশন থেকে আপনার পা কে মুক্তি দেয়। সোজা কথায়,  আপনি এক্সিলারেশনে পা না রেখেই আপনার গাড়িকে ইচ্ছেমতো গতিতে চালাতে পারবেন।

এটা মূলত আনা হয়েছে এমন সব হাইওয়ের জন্য যেখানে বারবার দাড়ানোর দরকার হয়না। বাইরের দেশে অফ রোডগুলোতে জ্যাম একদম থাকেনা আর আপনিও দাড়াবেন না কোথাও এমন অবস্থায় একটা নিদিষ্ট স্পিডে ক্রুজ কন্টোল করে দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকুন গাড়ির স্পিড একটু কমবেনা বা বাড়বেনা। 

বর্তমানে প্রায় লেটেস্ট সব গাড়িতেই এই ফিচার আছে। তবে দুঃখের কথা হল বাংলাদেশে এটা একদমই অকার্যকর! কেননা আমাদের দেশে এমন কোন রোড নেই যেখানে আপনি এক স্পীডে গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবেন।

তবে আপনাদের সুবিধার জন্য ব্যাবহার পদ্ধতি জানিয়ে দিচ্ছি।

.

প্রথমতঃ যেকোন ভ্রমনে ড্রাইভিং পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে ক্রূজ কন্ট্রোল ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ায় ব্যাবহার করা যাবেনা। এছাড়া দূরত্ব ও সময়ের বিবেচনায় রাস্তায় যেকোন প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে সতর্ক থাকা খুব দরকার। বিশেষ করে যদি প্রথমবারের মত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন কেউ।

.

রাস্তার অবস্থার উপর  গাড়িতে স্পিড কতটা দেয়া হবে সেটা নির্ভর করছে। সাধারনতঃ ক্রূজ কন্ট্রোলে ঘন্টায় ৫৫ থেকে ৭০ মাইল স্পিড আদর্শ ধরা হয়। তবে কোন রাস্তায় যদি স্পিড লিমিট দেওয়া থাকে ত এবং সেটা এর কম তাহলে ব্যবহার করা যাবেনা। এটা খুব বিপদজনক সাথে অপনার নেওয়া সবচেয়ে বোকামি সিদ্ধান্ত।

.

প্রায় সব গাড়িতে ক্রূজ কন্ট্রোল অপশনটি স্টিয়ারিং হুইলের পাশে থাকে। টয়োটার কার গুলোতে সেইম এভাবে আছে। আপনি যে গতি চান সেটুক গতি তুলে ক্রূজ কন্ট্রোল অপশন থেকে ‘অন’ বাটন চাপ দিলেই এ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে। এখন থেকে ওই নিদিষ্ট গতিতেই গাড়ি চলতে থাকবে।

.

 ক্রূজ কন্ট্রোল এক্টিভেট হওয়ার পরে যদি মনে করেন গতি আরেকটু বাড়াতে হবে তাহলে এমন কিছু প্লাস- মাইনাস বাটন থাকে যেটা দিতে গতি বাড়ানো যাবে। বিষয়টা আরেকটু ভালভাবে বললে হয়; ধরুন  ৫০kmh স্পীডে গাড়ী চলছে আর আপনি গতি আরেকটু বাড়াতে চাচ্ছেন তাইলে ওই প্লাস মাইনাস বাটনগুলো চেপে গতি বাড়াতে বা কমাতে পারেন। প্রায় গাড়িতেই এরকম বাটনের অপশন থাকে।অথবা এক্সেলারেটর পেডেল চেপে গাড়ি  গতি তুলে উদ্দিষ্ট গতি তুলে আবার ক্রুজ কন্টোল এ্যাক্টিভেট করে দিতে পারবেন। একবার সেট করা হয়ে গেলে এক্সেলারেটর থেকে পা সরিয়ে নেয়া যায়। তখন গাড়ি আপন গতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে থাকে।

.

এবার আসা যাক থামাবেন কীভাবে?

গাড়ি ক্রুজে চলছে কিন্তু হঠাৎ করে গতি কমানোর বা থামানোর দরকার পড়ল। তেমন কিছুই করার নাই যাস্ট ব্রেক চাপ দিবেন ক্রুজ কন্টোল সিস্টেম অফ হয়ে যাবে। অাবার চালু করতে হলে উপরের নিয়মে করবেন।

.

লং জার্নিতে ক্রুজ কন্টোল খুব আরামদায়ক ফিচার সন্দেহ নেই। কার এক্সেলেরেটরে পা দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টার পা দিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করে!

আমেরিকাতে বেশ জনপ্রিয় এটা।তবে এরজন্য চাই সোজা আর প্রসস্ত রোড। একটু ভুল হলেই গাড়ি কন্ট্রোলে থাকবেনা আর মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটা অসম্ভব কিছু নয়।

আমরা কোনভাবেই প্রপার রোড ছাড়া এটা ব্যাবহার করতে উৎসাহিত করছি না। ব্যাবহার না করাই ভাল। তবে এক্সপ্রেসওয়ে তে ব্যাবহার করা যেতে পারে। 


Join CarHub BD [ Official ]

Post a Comment

0 Comments