আজকের ইন ডেপথ রিভিউ Toyota RAV-4 by CArhub bd

 





Toyota RAV-4



আজকের ইন ডেপথ রিভিউ Toyota RAV-4
রিসেন্টলি টয়োটা তাদের সব গাড়িই নতুন TNGA প্লাটফর্মে পাঠাচ্ছে যেমন নতুন Harrier Camry, Corolla সবই TNGA প্লাটফর্মের উপর বিল্ট হচ্ছে যার কারনে টয়োটা এখন আর আগের মতো বোরিং নেই। তাদের C-HR এবং নতুন হ্যারিয়ার বড় একটা এক্সামপল এটার। মানতেই হবে অনেক গুড লুকিং কার ওগুলো, সো ব্যাপারটা ভালো একই ডিজাইন দেখতে বিরক্ত চলে আসে। নতুন এই RAV-4 দেখতে পাচ্ছেন অনেক এ্যাংরি শার্পার লুক নিয়ে এসেছে। এমনকি তারা নামের প্রেইস পর্যন্ত চেঞ্জ করে ফেলেছে। আগে ছিলো Recreational Activity Vehicle এখন হয়েছে Robust Accurate Vehicle। এটা বলার কারন আছে, নতুন TNGA প্লাটফর্মের গাড়িগুলো টয়োটা বলছে আগের থেকেও বেটার এজ্যাইল, স্টেবল এবং সেফ হবে। RAV-4 এর নতুন ফ্রন্ট ফেইসে বাপারটা খুব ভালোভাবেই বোঝা যায়। এটার শার্প ফেইস, ছোটখাটো বাট স্পোর্টি গ্রিল এবং বাম্পারের কার্ভি বডি লাইনগুলাই বলে দেয় এতে রোবাস্ট একটা ভাব আছে। দেখতে অনেক লং মনে হবে, থ্যাংকস কারন টয়োটা বডিটা ফোলানো টাইপ করেনি সো দেখতে ভালোই লাগে RAV-4 এর স্পোর্টি নেচারটা পাওয়া যায়। পেছনের টেইললাইটে অনেক ইমপ্রুভমেন্ট এসেছে, টেইললাইটগুলো আগের হ্যারিয়ারের মতোন অনেকটা। স্লিক ডিজাইন হওয়ায় দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে, এখানেও ক্রেডিটটা নতুন প্লাটফর্মের। ও হ্যাডস ফ্রী টেইল গেট আছে, মানে পেছনে বডির নিচে পা সোয়াপ করলে গাড়ির টেইলগেটটা অটো খুলে যাবে, বেসিক্যালি আপনার হাতে কিছু থাকলে যেন খুলতে সুবিধা হয় এইজন্য। পেছনের দরজাগুলো অলমোস্ট ৯০° তে খুলে তাই কারো ঢুকতে বের হতে কোন প্রবলেম হবেনা ইভেন মোটা হলেও। RAV-4 এর সাথে একটা জিনিস সবসময় যায় সেটা হলো প্রাকটিক্যালিটি। শুরু থেকেই RAV-4 ছিলো প্রাকটিক্যাল একটা SUV যেটা আপনার ডেইলি লাইফের সাথে পুরোপুরি ম্যাচ করে চলতো। এবারও সেম, নতুন RAV-4 এর বুট স্পেস ওর ক্লাসের মধ্যে ওয়ান অব দ্যা বেস্ট, বিশাল বুট স্পেস Honda CR-V এবং Mazda CX-5 থেকেও বেশী।
এবার ইন্টেরিয়র নিয়ে বলা যাক। নতুন RAV-4 এর ইন্টেরিয়র খুবই খুবই এট্রাকশনাল করা হয়েছে। এমনকি এটার ইন্টেরিয়র প্রাডো থেকেও বেস্ট লুকিং যদিও প্রাডো লুক এর থেকে কোয়ালিটিতে ফোকাস করে যেহেতু ডেডিকেটেড অফ-রোডার গাড়ি। যাইহোক নতুন RAV-4 এর ইন্টেরিয়র ম্যাটারিয়ালও অনেক সফট টাচ। ড্যাশবোর্ডের লেদার, ডোর প্যাডের, লেদার স্টিয়ারিং উইথ মাল্টি ফাংশনাল বাটনস সবকিছু মিলিয়ে ইন্টেরিয়র ডিজাইনের সাথে RAV-4 এর ককপিট অনেক স্মার্ট আর কম্ফোর্টেবল একটা ককপিট। ডেফিনেটলি Honda CR-V থেকে বেশি স্মার্ট লুকের, কারন CR-V এর ইন্টেরিয়র কিছুটা ওল্ড স্কুল টাইপ। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স CR-V বা CX-5 থেকেও অনেক বেশী। সুবিধা হচ্ছে আপরাইট ড্রাইভিং পজিশন পাবেন সো আপনার মনে হবে একটা বিগ ফুল সাইজ SUV চালাচ্ছেন লাইট Land Cruiser। এছাড়াও ইন্টেরিয়রে ৭/৮ ইঞ্চির একটা ইনফোটেইনমেন্ট ডিসপ্লে আছে যেটায় এপল কারপ্লে এবং এন্ড্রয়েড অটো দুইটাই আছে,সো চিন্তা নাই। ডিভাইটাও অনেক কাস্টমাইজেশন করা যায়। নতুন RAV-4 এর হেডরুম এবং লেগরুম এই সেগমেন্টে ওয়ান অব দ্যা লার্জেস্ট, CX-5 এবং CR-V থেকেও অনেক বেশী, এছাড়া পেছনে এসি ভেন্ট আছে এবং একটা স্পেশাল ফিচার আছে, সেটা হলো ভেন্টিলেটেড সিট। মানে আপনি যেখানে বসবেন সেভানে সিটের মধ্যে ভেন্টিলেশন আছে। তাতে থাই বা এরকম সেন্সিটিভ জায়গাগুলোতে অনেক আরাম লাগবে, এটা অনেক হাই এন্ড ফিচার সাধারনত প্রিমিয়াম SUV তে দেখা যায়। তবে একটা জিনিস কম আছে সেটা হলো পেছনের প্যাসেঞ্জারদের জন্য সামনের সিটে ম্যাগাজিন হোল্ডার নেই! যদিও এই জিনিস খুব একটা ইউজ করিনা আমরা, তারপরেও আপনার ব্যাপার। ড্রাইভারের জন্য মেমোরি সিটস আছে, মিউজিক প্যানেলে ভলিউম বাড়ানো কমানোর জন্য বাটন আছে(থ্যাংকস), এছাড়াও এসি প্যানেল স্মার্টলি ডিজাইনড। অল ইন অল নতুন RAV-4 এর ইন্টেরিয়র তার ক্লাসে ওয়ান অব দ্যা বেস্ট। RAV-4 এ ইঞ্জিন হিসেবে থাকছে 2000cc পেট্রোল অথবা 2500cc হাইব্রিড পেট্রোল। আমাদের দেশের মানুষ 2500cc টাই নেওয়ার সম্ভাবনা বেশী কারন হাইব্রিড হিসেবে ট্যাক্স কম। আসলে আমি মনে করি এটাই ঠিক আছে কারন গাড়িটা যথেষ্ট বড় তাই এইধরনের গাড়ি চালনোর জন্য বড় ইঞ্জিনই তুলনামূলক ভালো পারফর্ম করে। এবং AIT ব্যাপারটা হচ্ছে যিনি RAV-4 এফোর্ড করতে পারবে তার জন্য 2500cc AIT দেওয়াটাও ইম্পসিবল কিছু না। তাও যদি মনে খুত থেকে যায় 2000cc টা নিতে পারেন। এর ধেকে কম আশা করবেন না কারন এত হেভী চেসিসের গাড়ির জন্য ছোট ইঞ্জিন না। তো 2500cc হাইব্রিড থেকে 219hp এবং 279 Nm টর্ক আসে। পাওয়ার ফিগার ন্যাচারালি এ্যাসপিরেটেড ইঞ্জিন হিসবেে যথেষ্ঠ ভালো ফিগার। 1530kg+ গাড়ির জন্য প্রায় 280 Nm পার্ফফেক্ট। আপনি RAV-4 দিয়ে বেশকিছু অফরোডিং ও করতে পারবেন লাইক গ্রামে গঞ্জে ভাঞ্জাচোরা রোডে ট্রাভেল করতে পারবেন, পাহাড়ি এলাকায় যেতে পারবেন অনায়সে এরকম আরকি। তাছাড়া গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বেশী হওয়ায় রোড যেমনই হোক অসুবিধা হবেনা। অফ-রোড এর জন্য টর্ক ভেক্টরিং অল হুইল ড্রাইভ ভার্সন AWD আছে, মানে রোড কন্ডিশন বুঝে গাড়ি সামনের বা পেছনের চাকায় টর্ক সাপ্লাই করবে যাতে রোডের উপর আপনার সবসময় ভালো ট্রাকশন থাকে। এর ফলে যে কোন উচু নিচা জায়গা, বালি, গর্তে গাড়ি পড়লে আটকে থাকবেনা যেহেতু 280 Nm টর্ক আছে। চাইলে পুরো এই 280Nm টর্কই ডে কোন চাকায় দিতে পারবেন! তাতে স্ট্যাবিলিটি বাড়বে, লোড ডিস্ট্রিবিউশন ভালো হয় এবং অফ-রোড ক্যাপাবিলিটি বাড়ে। ইঞ্জিনের সাথে ম্যাচ করে গাড়ির সাথে অাছে e-cvt গিয়ারবক্স। E-cvt মানে গিয়ারবক্সের সাথে মোটরটাও ইলেকট্রনিক্যালি কাজ করে থাকে। ফলে এক্সেলেরেশন ভালো হয়, ইনস্টেন্ট রিয়েল টাইম টর্ক পাওয়া যায় এবং পাওয়ার ল্যাগ কম হয় কনভেনশনাল cvt থেকে। গাড়িটার আরেকটা সাইড হলো নতুন RAV-4 অনেক সেফ, ড্রাইভার আর প্যাসেঞ্জার দুজনের জন্যই। RAV-4 এ অনেক অনেক সেফটি ফিচারস আছে। 360° ক্যামেরা তো আছেই, রেয়ার ক্রস ট্রাফিক এ্যালার্ট আছে মানে পার্কিং করার সময় পেছনে কিছু থাকলে গাড়ি অটো ব্রেক করে ফেলবে, টোটাল ৮টা এয়ারব্যাগ, LDA আছে অর্থ্যাৎ আপনি লেনের বাইরে চলে গেলে গাড়ি নিজে স্টিয়ার করে লেনে নিয়ে আসবে, প্রি ক্রাশ সিস্টেম আছে মানে গাড়ি লো স্পীডে চলার সময় সামনে কিছু এসে গেলে নিজে ব্রেক করে ফেলবে, এড্যাপটিভ ডাইনামিক রাডার ক্রুজ কন্ট্রোল আছে মানে এক্সেলেরেটর থেকে পা উঠিয়ে ফেললেও গাড়ি সামনের গাড়ির স্পীড ফলো করে নিজে নিজে চলতে থাকবে প্রয়োজনে স্পীড বাড়া বা কমাতেও পারবে; অনেক গাড়িতে এটা ০-৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ করে কিন্ত RAV-4 এ ফুল স্পীড মানে 0-110 kmh পর্যন্ত স্পীডে গাড়ি নিজে নিজে চালাতে পারবে , অটো হাই বিম আছে হাইওয়েতে গেলে নিজে নিজে হাইবিমে কনভার্ট হবে, সিটিতে লো বিমে থাকবে। দেখতেই পাচ্ছেন অনেক অনেক সেফটি ফিচারস আছে, সাথে অফ রোডিং ক্যাপাবিলিটির কথা মাথায় রেখে বানানো শক্ত চেসিস তো আছেই। টয়োটার কোন গাড়িই আনরিলায়বল না, RAV-4 কেনার আরেকটা কারন হবে এর রিলায়বিলিটি, আপনি দাম দিয়ে কিনলেও ২০-২৫ বছর ইজিলি চলে যাবে স্টক পার্টসেই।
এবার আসা যাক কিছু কন্স নিয়ে, প্রথমতো RAV-4 এর ডিজাইন অতিরিক্ত এ্যাংরি আর স্পোর্টিয়ার লুকিং যেটা একটু বয়স্ক যাদের তাদের ভালো নাও থাকতে পারে। 2500cc সো মেনটেনেন্স ভারি, তবে যারা RAV-4 এফোর্ড করতে পারবে তাদের জন্য প্রবলেম হবেনা মনেকরি। নতুন RAV-4 কিনতে গেলে ৮০-৯০ লাখ টাকা পড়বে। প্রাইসিংটা একটু বেশী মনে হয়েছে, রিমেম্বার আমরা জেডিএম ইউনিট মানে Made in Japan RAV-4 এর কথা বলছি। তো এই মুহূর্তে আপনার যদি বাজেট প্রবলেম না থাকে আপনি কিনতে পারেন আর চাইলে সামনের বছর বা আরো কিছুদিন ওয়েট করে কিনতে পারেন তাতে দাম আরো কমে যাবে। তবে যে দামেই কেনেন ওয়ার্থ ইট, কারন খুবই স্টাইলিশ আপ টু ডেট লুক, কম্ফোর্টেবল এবং খুব ভালো প্রাকটিক্যাল অফ-রোডার। কিনলে চোখ বন্ধ করে ২০-২৫ বছরের বেশী লাস্ট করবে সবকিছু স্টক দিয়েই।

post:https://www.facebook.com/mycarhub/


Post a Comment

0 Comments